আত-তাক্বওয়া মাসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টার যা কুমারপাড়া, সিলেট শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। বিগত ২৩ মার্চ ২০১৮ সাল থেকে নিয়মিত সালাত আদায় করা সহ বিভিন্ন দ্বীনি ও সামাজিক সেবামূলক কার্যক্রম গ্রহণ করে আসছে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য। এক্ষেত্রে আল্লাহ শুকরিয়া আদায় করছি অতঃপর যে সকল ভাই-বোনেরা আমাদের আর্থিক কিংবা পরামর্শের মাধ্যমে সহযোগিতা করছে তাদের শুকরিয়া আদায় করছি। আমাদের গৃহিত বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম বিদ্যমান তার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম গুলো উল্লেখ করছি
বিশুদ্ধ পানি পানের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় আত তাক্বওয়া মাসজিদ সূচনা লগ্ন থেকেই বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এইজন্য মাসজিদের অভ্যন্তরে এবং বাহিরে মুসল্লি ও পথচারিদের জন্য বিশুদ্ধ পানি পানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহর রহমতে এই কার্যক্রম চালিয়ে রাখার বিষয়ে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। রেফ্রিজারেটর এর মাধ্যমে টান্ডা পানির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হযেছে জনসাধারণের জন্য।
আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আত তাকওয়া মাসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টারে ২০১৮ সাল থেকেই ওযু খানা ও শৌচাগার সার্বক্ষণিক খোলা রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ওযুখানা ও শৌচাগার শুধুমাত্র সালাতের সময় খোলা থাকলে পথচারী, মুসাফির কিংবা হঠাৎ আগত মুছল্লিদের পবিত্নতা অর্জন করা কষ্টকর হয়ে পরে। এই সমস্যা দূরীকরণ এর লক্ষে আমরা শুরু থেকেই শৌচাগার ও ওযুখানা সার্বক্ষণিক খোলা রাখার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খোলা রাখছি।
আত-তাক্বওয়া মাসজিদ শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বিশেষ করে কোভিড-১৯ ভাইরাস যখন দেশব্যাপী বিস্তার লাভ করে তখন আত-তাক্বওয়া মাসজিদ মাসজিদের অভ্যন্তরে, মাসজিদ প্রাঙ্গন ও মাসজিদের বাহিরে জীবানুনাশক স্প্রের মাধ্যমে সচেতনতার সাথে জীবানুনাশক কার্যক্রম গ্রহণ করে এবং মাসজিদে আগত মুছল্লি, মেহমান কিংবা মুসাফিরদের জন্য হাত জীবাণুমুক্ত করণ কার্যক্রম গ্রহণ করে। এলক্ষ্যে মাসজিদের বাহিরে রাস্তায় প্রবেশের মুখে হাত ধোয়ার ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
সিলেট কিংবা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত মেহমানদের খেদমত করার ব্যবস্থা আত-তাক্বওয়া মাসজিদ গ্রহণ করেছে। আগত মেহমানদের পরিচয় গ্রহণে জন্য নির্দিষ্ট বই রয়েছে। তাতে মেহমানদের নাম।ঠিকানা ও তাদের পরামর্শ লেখার ব্যবস্থা করা হয়। মেহমানদের প্রয়োজন অনুসারে খাবারের ব্যবস্থা ও গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
আত-তাক্বওয়া মাসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টার শুরু থেকেই রামাদ্বান মাসে সারা মাসব্যাপী ইফতারের ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তা আয়োজন করা হয়েছিলো। কিন্তু বিগত ২০২০ সালে করোনাময় বিশ্বে পবিত্র রামাদ্বান মাস সমাগত হয়। পরিস্থিতির কারণে "রামাদ্বান ফুড প্যাকেজ ২০২০" চালু করি। যে প্যাকেজে ছিলো ১,৫০০/- টাকা মূল্যের খেজুর,চাউল,ডাল,চানা,তেল,পেঁয়াজ এবং লবন। যাকাতের অর্থ 'রামাদ্বান ফুড প্যাকেজ' এ সংগ্রহ করা হয় নি। কারণ আত-তাক্বওয়া মাসজিদের পৃথক 'যাকাত ফান্ড' রয়েছে। যা শরিয়ত মোতাবেক নির্দিষ্ট খাতসমূহে বিলি করা হয়ে থাকে।
আত-তাক্বওয়া মাসজিদের পৃথক 'যাকাত ফান্ড' রয়েছে। যা শরিয়ত মোতাবেক নির্দিষ্ট খাতসমূহে বিলি করা হয়ে থাকে। যারা আমাদের যাকাত দান করেছে বন্টনের জন্য আমরা তা শরিয়ত নির্দেশিত খাতে বিতরণ করেছি আলহামদুলিল্লাহ এবং তার যথাযথ হিসাব রাখা হয়। যাকাত ফান্ডের মাধ্যমে সমাজের দারিদ্র ও মিসকিন জনগোষ্ঠীকে পড়ালেখা, চিকিৎসা ও জীবিকা নির্বাহের জন্য সাহায্য করা হয়ে থাকে।
কোভিড - ১৯ এর প্রারম্ভিক অবস্থায় দেশে লকডাউন সহো বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করে আমাদের সরকার কর্তৃপক্ষ । এতে অনেক ভাইদের আর্থিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে সেই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য মাসজিদ আত তাক্বওয়া টাকা সংগ্রহ করার মাধ্যমে বিভিন্ন পরিবারকে সাহায্য করে। এতে বহু মানুষ উপকৃত হয়। সমাজ ও রাষ্ট্রের যে কোন জরুরি পরিস্থিতিতে আত-তাক্বওয়া নিজস্ব উদ্যোগে ভূমিকা রাখে।
আত-তাক্বওয়া মাসজিদ এন্ড ইসলামিক সেন্টারে নিয়মিত দ্বীনী হালাকার আয়োজন করা হয়। সাপ্তাহিক মাসিক দারসের আয়োজন করা হয়ে থাকে বিভিন্ন সেমিনারের আয়োজন করা হয়ে থাকে। প্রতি বছর "সিরাতুল মুস্তাকীম সম্মেলন" নামক সম্মেলন এর আয়োজন করা হয়ে থাকে। উক্ত সম্মেলনে এবং বিভিন্ন হালাকায় বিশুদ্ধ আকীদার ও মানহাজের আলিম ও তালিবুল ইলমগণ অংশগ্রহণ করে দারস প্রদান করে থাকে। এইসব হালাকা ও সম্মেলনগুলো সর্বসাধারনের জন্য উন্মুক্ত। মহিলাগণও দারসে পৃথকভাবে বসে আলোচনা শ্রবণ করতে পারে। জুম'আহ সালাত পরবর্তী প্রশ্ন-উত্তর আয়োজন। এচাড়াও অনলাইনে সাপ্তাহিক তিনটি প্রোগ্রাম আয়োজন করা হয়ে থাকে যার মধ্যে দুইটি দারস ও একটি প্রশ্ন উত্তর পর্ব হয়ে থাকে। এলইডি স্ক্রীণে মাইখদের সরাসরি দারস কিংবা ধারণ করা বক্তব্য প্রচার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও সান্ধ্যকালীন ইসলামী হালাকার আয়োজন। সিলেট বিভাগ এর বিভিন্ন স্থানে উঠোন বৈঠক বা ঘরোয়া বৈঠক, মাহফীল এর আয়োজন করা হয়।
আত-তাক্বওয়া মাসজিদে বয়স্ক পুরুষসহ বয়স্ক মহিলা এবং শিশুদের জন্য পৃথক পৃথক কোরআন শিক্ষা ক্লাসের আয়োজন রয়েছে। এছাড়াও রামাদ্বান মাসে পুরো মাসব্যাপী এই আয়োজন বিশেষভাবে গ্রহণ করা হয়।
আত-তাক্বওয়া মাসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক নিজস্ব গোরাবা ফান্ডের মাধ্যমে অসহায় গরীব জনগোষ্ঠীর মধ্যে খাদ্যসামগ্রী, শীতবস্ত্র বিতরণ ও অন্যনান্য খাতে সহযোগিতা করা হয়। আত-তাক্বওয়া মাসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক নিজস্ব এতিম ফান্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা, পড়ালেখা, খাদ্যসামগ্রী বন্টন ও অন্যান্য খাতে সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।
দ্বীনি বই বিনামূল্যে বিতরণ, নির্দিষ্ট সংখ্যক বই ৫০% ছাড়ে ও কমিশন মূল্যে বই বিক্রি করা হয়ে থাকে এবং দূরবর্তী ভাইদের জন্য কুরিয়ারের মাধ্যমেও বই প্রেরণ করা হয়ে থাকে। এছাড়াও বইমেলায় আত-তাক্বওয়া অংশগ্রহণ করে থাকে। এছাড়াও আতর, টুপি, মেসওয়াক, কাফনেন কাপড় সহ অন্যান্য সুন্নাহ আইটেম ও সরবরাহ করা হয়।
আল্লাহর রহমতে আত-তাক্বওয়া এর নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় পাঠাগার ও ফতোয়া বিভাগ চালু করেছে। নির্দিষ্ট ফোন নাম্বারে মানুষ সহজে তাদের জীবন ঘনিষ্ঠ প্রশ্নের উত্তর লাভ করতে পারেন।
তাবলীগি সফরের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে মাসজিদ কিংবা মাদ্রাসায় গিয়ে মতবিনিময় করা হয়।